Murder Online
ফোনের আওয়াজ শুনে দৌড়ে গেলাম ,যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই ,অভির গলার আওয়াজ আমার মধ্যকর্ণে আঘাত হানল " একটা খারাপ খবর আছে জানিস , আমার যে মায়ের দূরসম্পর্কের এক বোনের ছেলে আছে না খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল -he is dead ,এই এর খবরটা"
শুনে বললাম " পুলিশ গেছে তো? Suicide না murder ?"
আমি বলল " বুঝতে পারা যাচ্ছে না এখনি । একবার গেলে ভালো হতো । যাবি?????"
"বেশ"
ঘটনাস্থলে পৌঁছলাম , ছেলেটির বডি পুলিশ পর্যবেক্ষণ করছে। " কী আন্দাজ করছেন " জিজ্ঞেস করতেই পুলিশ হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন " আরে মশাই ,আপনার মত গোয়েন্দা থাকতে আমি আর কি বলব?"
বললাম " বিষক্রিয়া তা তো বুঝলাম,কিন্তু কি বিষ টেস্ট রিপোর্ট পেলেন? "
ভদ্রলোক বললেন " গাছের মূল থেকে পাওয়া তীব্র বিষ "
"বুঝলাম- খুব সাংঘাতিক "
যদিও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তাও ছেলেটির মায়ের সাথে কথা বলা তখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওনাকে ঘটনাটা সংক্ষেপে বিবরণ দিতে বললাম । মৃত্যুর সময় আনুমানিক রাত ৯-৯:১০ ।
উনি বললেন " ৯ টার ঠিক একটু আগে ওর ঘর থেকে যা আওয়াজ পাচ্ছিলাম তাতে ওরা বেশ কিছু বন্ধু মিলে ভিডিও কল এ কথা বলা শুরু করেছিল ।ওর বাবা অফিস থেকে আসবে বলে দরজা -এ শুধু door lock দেওয়া ছিল , ছিটকিনি খোলা ছিল ।আনুমানিক ৯ টা নাগাদ আমাদের current off হয়ে যায়। ও ওর বন্ধুদের সেই কারণে ভিডিও কল কেটে দেবে বলে জানায়। আমি ঠাকুরঘর থেকে দেশলাই আনতে যাই ,ওর ঘরে মোমবাতি নিয়ে যাওয়ার আগেই একটা চিৎকার শুনে ওর ঘরে যাওয়ার সময় কারো সাথে আমার ধাক্কা লাগে ,তার দু মিনিট এর মাথায় আলো ফিরে আসে , কিন্তু তখন ওর নিথর দেহটাই আমার শেষ সম্বল ।
ওই ভিডিও কল এ থাকা সব বন্ধুর পরিচয় জানলাম ,প্রত্যেকেই স্কুল লাইফ এর বন্ধু ,কেউ কেউ এখনো একই কলেজ এ পরে,সকলের বাড়ি কাছাকাছি হওয়ার কারণে তখনি তাদের ডেকে পাঠালাম।
"বলো তোমাদের বন্ধু যে খুন হলো তোমরা বুঝলে না ?"
এক বন্ধু রাজ বললো " খুন কি করে বুঝলেন? ওর লাইফ এ যথেষ্ট ডিপ্রেশন ছিল,সুইসাইড ও তো করতে পারে?" । দ্বিতীয় বন্ধু বলরাজ বলল " কাইসে মালুম পড়তা , ভিডিও কল কে বাদ ভি ও অনলাইন থা ,খুন হুয়া কায়সে সোচে হুম ?"
এই পরিস্থিতিতে ওর আরেক বন্ধু নিখিল কে বেশ ভীত মনে হলো , ওকে এক গ্লাস জল দিয়ে বললাম ভয় নেই ,বলতো ঠিক কি হয়েছিল ? ও কাপা গলায় বলল "ওর মন খারাপ ছিল বলেই আমরা ভিডিও কল করেছিলাম , তন্ময় বলল ওর মন ঠিক হবে ,প্রথমে আমরা পাঁচজন ছিলাম ,পরে তন্ময় ও চলে আসে ।তারপর তিন জন ওরা অফ হয়ে যায় বলে আমরাও অফ হই ।
"কেন?"
"ঋষি রাস্তায় ছিল,কানেকশন প্রবলেম এর জন্য ও হঠাৎ অফ হয়ে যায়।তন্ময় বাড়ি ঢুকছিল ,ওর মা খুব স্ট্রিক্ট তো তাই ও নতুন জুতো দেখাতে দেখাতে বাই বলে অফ হয়।অমিতের current off হয়।"
-"কটায় ভিডিও কল হয়েছিল ঋষি?"
- " মানে ওই ৮টা ৫৭ নাগাদ,তিন মিনিট ও ঠিকঠাক কথা হইনি ।"
-" বেশ,তোমরা এখন বাড়ি যাও দরকার হলে ডাকবো, ভয় পেওনা।"
বাড়িতে এসে অনেকক্ষন ভাবলাম অবসাদে সুইসাইড করলনা তো ছেলেটা ???
[২]
ওর ব্যাপারে সব তথ্য জানার জন্য ওর কলেজে গিয়ে ওর বন্ধুবান্ধব ও টিচার দের সাথে কথা বললাম । বুঝলাম পড়াশুনায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফার্স্ট আসার প্রেসার ছিল ওর উপর ।তার ওপর সে একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে তার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদের অবসাদ ওকে গ্রাস করেছিল।
অমিতের মায়ের অনুমতি নিয়ে অমিত এর ঘর খুঁজতেই ডাস্টবিন থেকে কিছু অবসাদ দূর করার ওষুধ এর স্ট্রিপ পাই।ওর মা এই ব্যাপারে কিছুই জানেনা।
এবার এক এক করে ওদের সাথে কথা বলার পালা , রাজ এর বাড়ি গেলাম প্রথম , ও বেশ গাছের প্রতি আসক্ত,আমি বললাম "আচ্ছা গাছ কখনো কখনো প্রাণনাশক জানো?"। ও বলল Toxin তো? জানি।"
-"তোমার সাথে অমিত এর শেষ কবে দেখা হয়েছিল?"
-"ওরা সবাই একসাথে এসছিল আমার বাড়িতে ,অমিত হাসতে হাসতে বললো আমায় ভাই একটু বিষ দিবি ভাই ?? বললাম বিষ জানিনা ভাই বিষবৃক্ষের সন্ধান দিতে পারি ভাই"। তারপর হেসে দি ।
নিখিল গান ভালোবাসে ,ওকে বিশেষ বিরক্ত করলাম না ।অভি কে নিয়ে অনেক জায়গা ঘুরেছি ,ওর শরীর টা খারাপ লাগছিল বলে বাড়ি চলে যেতে বললাম।
গেলাম তন্ময়ের বাড়ি ওর মা বেশ চা খাওয়ালো, ওকে বললাম তোমার নতুন জুতোটা আমায় দেখাবেনা? ও হেসে ছুটে গিয়ে নিয়ে এলো ।
-" আচ্ছা ভিডিও কল এর টাইম এ কি করছিলে?
-"বাড়ি ঢুকছিলাম,দেখলাম হাশবল টানা দরজার, বুঝলম মা ওপরের আণ্টি এর ঘরে গেছেন ।"
-" ঘুরিয়ে কল কর নি ?"
-" কেউ অনলাইন ছিলনা অমিত ছাড়া ,ঘরে ঢুকে পড়তে বসলাম ,আর অমিত কে বললাম আমার Insta account ফলো করতে। ও মেসেজ সিন ও করলো , রিপ্লাই দিল না ।বুঝিনি এরম কিছু ঘটে গেছে ।"
-" Insta account এর নাম কী ?"
-" tot2108 "
-" এরম কেনো? "
-" Tonmoy Tiwari , 2108 - 21st August - আমার জন্মদিন"
আমার ফোন এর চার্জ শেষ হওয়ার জন্য তন্ময় এর ফোন থেকে অভির খবর নিলাম । ওকে ওর মা কে ডাকতে বললাম । দেখলাম ছেলেটার ভিন্ন ভাষার বই এর সংগ্রহ আছে । ওর মা এর সাথে ওর কথার কোনো অসঙ্গতি পেলাম না ,উনি সাড়ে নয়টার সময় নিচে নেমে ছেলেকে পড়তে বসা দেখেন ।
অভি কে বাড়ি ফিরে আশা দিলাম যে অমিতের মৃত্যুরহস্য আমি সমাধান করবই।
শেষে গেলাম ঋষি এর বাড়ি যা অমিতের বাড়ির সবচেয়ে কাছে ,ওকে বললাম ভিসি করার সময় তুমি তো রাস্তায় ছিলে ,তোমার জন্য সবচয়ে সোজা ওকে খুন করা ।
-"একদম না, আমি একটা প্রিন্ট নিতে রাজাতলা এ গিয়েছিলাম , ওখানে যা connection নেট এর ।যদিও প্রিন্ট নেওয়ার আগেই খবরটা পেয়ে চলে আসতে হয়।"
অভিকে সব বলতেই ও বললো না রে তুই শুধু শুধু সন্দেহ করছিস, ও বোধহয় সুইসাইড ই করলো।
[৩]
অমিতের বাড়ি তেই সবাই কে আসতে বললাম । সময় নষ্ট না করে সরাসরি প্রশ্ন করলাম ঋষিকে -
"কেন করলে খুনটা ?"
-" মানে ?"
- " প্রশ্নটা তোমায় করা উচিত ছিল না তাই না তন্ময় ?"
-"মানে?"
" ভিসি তে কেউ তোমায় একবারও দেখেনি ,দেখেছিল সিড়িতে নতুন জুতো এ তোমার footstep যা অমিত এর বাড়ির সিড়িতে ছিল , বাইরের মেইন সুইচ এর দিকে যাচ্ছিল , পড়াশোনা তে ওকে বিট করতে পারোনি ,এমন কি যে মেয়েটাক তোমার পছন্দ ছিল তাকে ও নিজের কথা বলে রাজি করায় ,অনেক রাগ ছিল তোমার । তোমার রিসার্চ এর লেখা টাও ও নিয়ে নিয়েছিল যা তুমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারোনি। সেদিন যখন তোমার ফোন টা নিলাম কল লিস্ট এ মেয়েটার নম্বর পেলাম , ডিলিট করতে ভুলে গেছিলে। আর তোমার মা কে যখন ডাকতে গেলে তোমার গুগল সার্চ এর হিস্টোরি দেখলাম যেখানে ওই গাছের poison টার ওপর অনেক ঘেটেছ দেখলাম , যার কথা রাজ এর মুখে শুনেছিলে। খুন করাটা কি ওকে সরানোর একমাত্র রাস্তা ছিল বলো ?"
ওর চোখে জল ছিল,
- কারেন্ট এর লাইন অফ করলে এমন সময় যখন ওর বাবা বাড়ি ফেরে বলে দরজা খোলা থাকে, মেরে ফেলার পর ডেডবডি এর সামনে দিয়ে মেসেজ টাইপ করতে করতে যাওআর সময় ওর মা এর সাথে ধাক্কা লাগে ।আর তোমার ওই Insta account এর নামটা ,tot2108 - জার্মান ভাষায় tot মানে "dead" আর 2108 মানে রাত ৯ টা ৮,যখন খুন টা করেছিলে সেই সময়টা,ওই সময় কত মাথা খাটালে বলো !!!!কথা এক অর্থ অনেক ।প্রচুর জ্ঞান না তোমার ভিন্ন ভাষা সমন্ধে । তাড়াতাড়ি বাড়ি এসে আবার চুপচাপ পড়তে বসে গেলে ,বাহ!!! পালিও না পুলিশ বাইরে আছে ।
বেরিয়ে আসার সময় বলে এলাম - "সেদিন নতুন জুতোটা আমায় না দেখালেও পারতে ,,,, গোয়েন্দা হয়ে murder spot এর জুতোর দাগ মনে রেখে তোমার জুতোর সাথে মেলাবনা তা কি হয় ?"
।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
by Moumoyee Chakraborty
শুনে বললাম " পুলিশ গেছে তো? Suicide না murder ?"
আমি বলল " বুঝতে পারা যাচ্ছে না এখনি । একবার গেলে ভালো হতো । যাবি?????"
"বেশ"
ঘটনাস্থলে পৌঁছলাম , ছেলেটির বডি পুলিশ পর্যবেক্ষণ করছে। " কী আন্দাজ করছেন " জিজ্ঞেস করতেই পুলিশ হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন " আরে মশাই ,আপনার মত গোয়েন্দা থাকতে আমি আর কি বলব?"
বললাম " বিষক্রিয়া তা তো বুঝলাম,কিন্তু কি বিষ টেস্ট রিপোর্ট পেলেন? "
ভদ্রলোক বললেন " গাছের মূল থেকে পাওয়া তীব্র বিষ "
"বুঝলাম- খুব সাংঘাতিক "
যদিও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তাও ছেলেটির মায়ের সাথে কথা বলা তখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওনাকে ঘটনাটা সংক্ষেপে বিবরণ দিতে বললাম । মৃত্যুর সময় আনুমানিক রাত ৯-৯:১০ ।
উনি বললেন " ৯ টার ঠিক একটু আগে ওর ঘর থেকে যা আওয়াজ পাচ্ছিলাম তাতে ওরা বেশ কিছু বন্ধু মিলে ভিডিও কল এ কথা বলা শুরু করেছিল ।ওর বাবা অফিস থেকে আসবে বলে দরজা -এ শুধু door lock দেওয়া ছিল , ছিটকিনি খোলা ছিল ।আনুমানিক ৯ টা নাগাদ আমাদের current off হয়ে যায়। ও ওর বন্ধুদের সেই কারণে ভিডিও কল কেটে দেবে বলে জানায়। আমি ঠাকুরঘর থেকে দেশলাই আনতে যাই ,ওর ঘরে মোমবাতি নিয়ে যাওয়ার আগেই একটা চিৎকার শুনে ওর ঘরে যাওয়ার সময় কারো সাথে আমার ধাক্কা লাগে ,তার দু মিনিট এর মাথায় আলো ফিরে আসে , কিন্তু তখন ওর নিথর দেহটাই আমার শেষ সম্বল ।
ওই ভিডিও কল এ থাকা সব বন্ধুর পরিচয় জানলাম ,প্রত্যেকেই স্কুল লাইফ এর বন্ধু ,কেউ কেউ এখনো একই কলেজ এ পরে,সকলের বাড়ি কাছাকাছি হওয়ার কারণে তখনি তাদের ডেকে পাঠালাম।
"বলো তোমাদের বন্ধু যে খুন হলো তোমরা বুঝলে না ?"
এক বন্ধু রাজ বললো " খুন কি করে বুঝলেন? ওর লাইফ এ যথেষ্ট ডিপ্রেশন ছিল,সুইসাইড ও তো করতে পারে?" । দ্বিতীয় বন্ধু বলরাজ বলল " কাইসে মালুম পড়তা , ভিডিও কল কে বাদ ভি ও অনলাইন থা ,খুন হুয়া কায়সে সোচে হুম ?"
এই পরিস্থিতিতে ওর আরেক বন্ধু নিখিল কে বেশ ভীত মনে হলো , ওকে এক গ্লাস জল দিয়ে বললাম ভয় নেই ,বলতো ঠিক কি হয়েছিল ? ও কাপা গলায় বলল "ওর মন খারাপ ছিল বলেই আমরা ভিডিও কল করেছিলাম , তন্ময় বলল ওর মন ঠিক হবে ,প্রথমে আমরা পাঁচজন ছিলাম ,পরে তন্ময় ও চলে আসে ।তারপর তিন জন ওরা অফ হয়ে যায় বলে আমরাও অফ হই ।
"কেন?"
"ঋষি রাস্তায় ছিল,কানেকশন প্রবলেম এর জন্য ও হঠাৎ অফ হয়ে যায়।তন্ময় বাড়ি ঢুকছিল ,ওর মা খুব স্ট্রিক্ট তো তাই ও নতুন জুতো দেখাতে দেখাতে বাই বলে অফ হয়।অমিতের current off হয়।"
-"কটায় ভিডিও কল হয়েছিল ঋষি?"
- " মানে ওই ৮টা ৫৭ নাগাদ,তিন মিনিট ও ঠিকঠাক কথা হইনি ।"
-" বেশ,তোমরা এখন বাড়ি যাও দরকার হলে ডাকবো, ভয় পেওনা।"
বাড়িতে এসে অনেকক্ষন ভাবলাম অবসাদে সুইসাইড করলনা তো ছেলেটা ???
[২]
ওর ব্যাপারে সব তথ্য জানার জন্য ওর কলেজে গিয়ে ওর বন্ধুবান্ধব ও টিচার দের সাথে কথা বললাম । বুঝলাম পড়াশুনায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফার্স্ট আসার প্রেসার ছিল ওর উপর ।তার ওপর সে একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে তার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদের অবসাদ ওকে গ্রাস করেছিল।
অমিতের মায়ের অনুমতি নিয়ে অমিত এর ঘর খুঁজতেই ডাস্টবিন থেকে কিছু অবসাদ দূর করার ওষুধ এর স্ট্রিপ পাই।ওর মা এই ব্যাপারে কিছুই জানেনা।
এবার এক এক করে ওদের সাথে কথা বলার পালা , রাজ এর বাড়ি গেলাম প্রথম , ও বেশ গাছের প্রতি আসক্ত,আমি বললাম "আচ্ছা গাছ কখনো কখনো প্রাণনাশক জানো?"। ও বলল Toxin তো? জানি।"
-"তোমার সাথে অমিত এর শেষ কবে দেখা হয়েছিল?"
-"ওরা সবাই একসাথে এসছিল আমার বাড়িতে ,অমিত হাসতে হাসতে বললো আমায় ভাই একটু বিষ দিবি ভাই ?? বললাম বিষ জানিনা ভাই বিষবৃক্ষের সন্ধান দিতে পারি ভাই"। তারপর হেসে দি ।
নিখিল গান ভালোবাসে ,ওকে বিশেষ বিরক্ত করলাম না ।অভি কে নিয়ে অনেক জায়গা ঘুরেছি ,ওর শরীর টা খারাপ লাগছিল বলে বাড়ি চলে যেতে বললাম।
গেলাম তন্ময়ের বাড়ি ওর মা বেশ চা খাওয়ালো, ওকে বললাম তোমার নতুন জুতোটা আমায় দেখাবেনা? ও হেসে ছুটে গিয়ে নিয়ে এলো ।
-" আচ্ছা ভিডিও কল এর টাইম এ কি করছিলে?
-"বাড়ি ঢুকছিলাম,দেখলাম হাশবল টানা দরজার, বুঝলম মা ওপরের আণ্টি এর ঘরে গেছেন ।"
-" ঘুরিয়ে কল কর নি ?"
-" কেউ অনলাইন ছিলনা অমিত ছাড়া ,ঘরে ঢুকে পড়তে বসলাম ,আর অমিত কে বললাম আমার Insta account ফলো করতে। ও মেসেজ সিন ও করলো , রিপ্লাই দিল না ।বুঝিনি এরম কিছু ঘটে গেছে ।"
-" Insta account এর নাম কী ?"
-" tot2108 "
-" এরম কেনো? "
-" Tonmoy Tiwari , 2108 - 21st August - আমার জন্মদিন"
আমার ফোন এর চার্জ শেষ হওয়ার জন্য তন্ময় এর ফোন থেকে অভির খবর নিলাম । ওকে ওর মা কে ডাকতে বললাম । দেখলাম ছেলেটার ভিন্ন ভাষার বই এর সংগ্রহ আছে । ওর মা এর সাথে ওর কথার কোনো অসঙ্গতি পেলাম না ,উনি সাড়ে নয়টার সময় নিচে নেমে ছেলেকে পড়তে বসা দেখেন ।
অভি কে বাড়ি ফিরে আশা দিলাম যে অমিতের মৃত্যুরহস্য আমি সমাধান করবই।
শেষে গেলাম ঋষি এর বাড়ি যা অমিতের বাড়ির সবচেয়ে কাছে ,ওকে বললাম ভিসি করার সময় তুমি তো রাস্তায় ছিলে ,তোমার জন্য সবচয়ে সোজা ওকে খুন করা ।
-"একদম না, আমি একটা প্রিন্ট নিতে রাজাতলা এ গিয়েছিলাম , ওখানে যা connection নেট এর ।যদিও প্রিন্ট নেওয়ার আগেই খবরটা পেয়ে চলে আসতে হয়।"
অভিকে সব বলতেই ও বললো না রে তুই শুধু শুধু সন্দেহ করছিস, ও বোধহয় সুইসাইড ই করলো।
[৩]
অমিতের বাড়ি তেই সবাই কে আসতে বললাম । সময় নষ্ট না করে সরাসরি প্রশ্ন করলাম ঋষিকে -
"কেন করলে খুনটা ?"
-" মানে ?"
- " প্রশ্নটা তোমায় করা উচিত ছিল না তাই না তন্ময় ?"
-"মানে?"
" ভিসি তে কেউ তোমায় একবারও দেখেনি ,দেখেছিল সিড়িতে নতুন জুতো এ তোমার footstep যা অমিত এর বাড়ির সিড়িতে ছিল , বাইরের মেইন সুইচ এর দিকে যাচ্ছিল , পড়াশোনা তে ওকে বিট করতে পারোনি ,এমন কি যে মেয়েটাক তোমার পছন্দ ছিল তাকে ও নিজের কথা বলে রাজি করায় ,অনেক রাগ ছিল তোমার । তোমার রিসার্চ এর লেখা টাও ও নিয়ে নিয়েছিল যা তুমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারোনি। সেদিন যখন তোমার ফোন টা নিলাম কল লিস্ট এ মেয়েটার নম্বর পেলাম , ডিলিট করতে ভুলে গেছিলে। আর তোমার মা কে যখন ডাকতে গেলে তোমার গুগল সার্চ এর হিস্টোরি দেখলাম যেখানে ওই গাছের poison টার ওপর অনেক ঘেটেছ দেখলাম , যার কথা রাজ এর মুখে শুনেছিলে। খুন করাটা কি ওকে সরানোর একমাত্র রাস্তা ছিল বলো ?"
ওর চোখে জল ছিল,
- কারেন্ট এর লাইন অফ করলে এমন সময় যখন ওর বাবা বাড়ি ফেরে বলে দরজা খোলা থাকে, মেরে ফেলার পর ডেডবডি এর সামনে দিয়ে মেসেজ টাইপ করতে করতে যাওআর সময় ওর মা এর সাথে ধাক্কা লাগে ।আর তোমার ওই Insta account এর নামটা ,tot2108 - জার্মান ভাষায় tot মানে "dead" আর 2108 মানে রাত ৯ টা ৮,যখন খুন টা করেছিলে সেই সময়টা,ওই সময় কত মাথা খাটালে বলো !!!!কথা এক অর্থ অনেক ।প্রচুর জ্ঞান না তোমার ভিন্ন ভাষা সমন্ধে । তাড়াতাড়ি বাড়ি এসে আবার চুপচাপ পড়তে বসে গেলে ,বাহ!!! পালিও না পুলিশ বাইরে আছে ।
বেরিয়ে আসার সময় বলে এলাম - "সেদিন নতুন জুতোটা আমায় না দেখালেও পারতে ,,,, গোয়েন্দা হয়ে murder spot এর জুতোর দাগ মনে রেখে তোমার জুতোর সাথে মেলাবনা তা কি হয় ?"
।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
0 Comments
Posting any kind of spam in comment section is prohibited
Emoji